তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে মানুষ নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করার পাশাপাশি, প্রতিযোগীতা দিয়ে বেড়ে চলেছে সেটাকে কিভাবে আরও আকর্ষণীয় বা আপডেট করা যায়। ফাস্ট চার্জিং মোবাইল ফোনের একটি আপডেটেট ফিচার। আজকাল বেশিরভাগ মোবাইল উৎপাদনকারী কোম্পানীগুলো নতুন ফোন রিলিজের সাথে সাথে মোবাইলের ফাস্ট চার্জিং বিষয়টিও মাথায় রাখে। আজকে আপনারা এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন, ফাস্ট চার্জিং কি? এবং মোবাইলে ফাস্ট চার্জিং কি ভাবে কাজ করে।
আরও পড়ুনঃ
ফাস্ট চার্জিং কি?
বর্তমানে নতুন রিলিজ হওয়া বেশিরভাগ ফোনগুলোতে ফাস্টচার্জিং প্রযুক্তি দিয়েই তৈরী করা হয়। আমরা বর্তমানে দেখে থাকি, অনেক বড় বড় মোবাইল ব্রান্ড বা কোম্পানীগুলো প্রায়ই তাদের সদ্য রিলিজ হওয়া ফোন গুলো মার্কেটিং করার সময় ৩০ মিনিটে ৮০ ভাগ বা ১ ঘন্টার মধ্যে শতভাগ চার্জিং বা ফাস্ট চার্জিং বিষয়টিও উল্লেখ করে থাকেন।
হ্যাঁ বন্ধুরা, বর্তমান টেকনোলজি এখন অনেক উন্নত, আপনার ফোন আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টার মধ্যে সম্পূর্ন চার্জ করা সম্ভব। যদি আপনার মোবাইলে ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে,তাহলে আপনি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনার মোবাইলে ফুল চার্জিং করে নিতে পারবেন।
ফাস্টচার্জিং বর্তমানে মোবাইল ব্যবহারকরীদের এক আলাদা সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে। রাত জেগে মোবাইলে গেম খেলে বা ইউটিউবে ভিডিও দেখে চার্জ দিতে ভুলে যাওয়া। আর সকালে উঠে অফিসে যাওয়ার সময় আফসোস করা এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়েছে ফাস্ট চার্জিং ।
ফাস্ট চার্জিং যে ভাবে কাজ করে।
ফাস্টচার্জিং এর ফলে আমরা আমাদের মোবাইল স্বাভাবিকের চাইতে খুব দ্রুত চার্জ করতে পারি। ফাস্ট চার্জিং মূলত আমাদের মোবাইলে শক্তির (কারেন্ট) এর পরিমান বাড়িয়ে দেয় এবং আমাদের মোবাইলের চার্জ খুব দ্রুত সম্পূর্ন হয়ে যায়। তার মানে ভোল্টেজ যত বেশি হবে, আমাদের মোবাইল ততদ্রুত চার্জ হবে।
আমরা সবাই কমবেশি জানি, বৈদ্যুতিক শক্তির পরিমাপ হল ওয়াট (Watt)। আর বৈদ্যুতিক শক্তির পরিমাপ ওয়াট (Watt) বের করা হয়, ভোল্টজ (Voltage) কে অ্যাম্পিয়ার (amps) দ্বারা গুন করে। আপনি হয়ত লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যে, আপনার মোবাইলের ব্যাটারি বা চার্জারে 5V-1A ,5V-2A বা 9V-2A এ রকম কিছু একটা লেখা আছে। এখানে V= Voltage এবংং A=amps। এখন আপনি হয়ত বুঝতেই পারছেন আপনার ফোনের চার্জিং ক্ষমতা কেমন। Voltage কে amps গুন করলেই বেরিয়ে যাবে। অর্থাৎ, যদি 5V-1A হয় তাহলে, 5*1=5 Watt, যদি 5V-2A তাহলে 5*2=10 Watt অথবা যদি হয় 9V-2A, তাহলে 9*2=18 Watt। আশাকরি এখন আপনি নিজেই বুঝেতে পেরেছেন, কোনটাতে ফাস্টচার্জিং হবে। অবশ্যই যেটার Watt বেশি।
সতর্কতাঃ
বন্ধুরা, বাজারে হয়ত অনেক ফাস্টচার্জিং এর চার্জার পাওয়া যায়। কিন্তু, আপনার মোবাইলে ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করার আগে দেখে নিন আপনার ফোনে ফাস্টচার্জিং প্রযুক্তি সার্পোট করে কিনা।কেননা, যদি আপনার মোবাইলে ফাস্ট চার্জিং সার্পোট না করে, আর যদি আপনি ফাস্টচার্জিং এর চার্জার ব্যবহার করেন, মানে আপনার মোবাইলের ব্যাটারীর ক্ষমতা 5V-1A অর্থাৎ 5 Watt আর আপনি ব্যবহার করছেন 9V-2A অর্থাৎ 18 Watt এর চার্জার।ভাবুন, আপনার ফোনের ব্যাটারীর ক্ষমতার চেয়ে যদি তাকে বেশি শক্তি চাপিয়ে দেন, তাহলে কি ব্যাটারী ভাল থাকবে ? আপনার ফোনের ব্যটারী তো নষ্ট হবেই, সাথে আপনার শখের ফোনটিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এজন্যই মূলত মোবাইল কোম্পানীগুলো মোবাইলের সাথে থাকা চার্জার ছাড়া অন্য কোন চার্জার দিয়ে মোবাইল চার্জিং করতে নিষেধ করে থাকেন।
আরও পড়ুনঃ
যেভাবে মোবাইল চার্জিং করা উচিতঃ
- একবারে মোবাইলে ফুল চার্জ না করে বার বার চার্জে দেওয়া ভাল।
- মোবাইল চার্জ করার সময় অরজিনাল চার্জার ব্যবহার করুন।
- মোবাইলের চার্জ ৪০% এর কম হলে চার্জে দিন।
- মোবাইলের চার্জ ৯০% এর বেশি হয়ে গেলে আর চার্জ না দেওয়ায় ভাল
মোবাইল চার্জিং এর ক্ষেত্রে যে কাজগুলো করা উচিত নয়ঃ
- রাতে ফোন চার্জে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়া। অর্থাৎ, সারারাত ফোন চার্জে দিয়ে রাখা উচিত নয়।
- অরজিনাল চার্জার ছাড়া অন্য কোন ফোনের চাজার ব্যবহার করবেন না।
- একবারে মোবইলে ৯০% এর বেশি চার্জ না দেয়ায় ভাল।
আপনি যদি আপনার মোবাইল ফোন চার্জিং এর ক্ষেত্রে এই নিয়ম গুলো মেনে চলেন। তাহলে আপনার ফোন এবং ব্যাটারী দুইটাই ভাল থাকবে। আমি নিজেও ব্যক্তিগত ভাবে আমার ফোন ও ল্যাপটপ চার্জিং এর ক্ষেত্রে এই বিষয় গুলো মাথায় রাখি।