বর্তমান সময় ভোটার আইডি কার্ড আমাদের প্রত্যেকটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। আমরা যারা এই দেশের নাগরিক হয়ে থাকি, আমাদের নাগরিকতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ পত্র আামদের ভোটার আইডি কার্ড।
আমাদের যাদের ভোটার আইডি কার্ড নেই তারা এই দেশের নাগরিক বলে গণ্য হয়ে থাকি না। আামদের দেশের প্রচলিত যাবতীয় সুযোগ সুবিধা থেকে ভোটার আইডি কার্ড না থাকার জন্য আমরা বঞ্চিত হয়ে থাকি। ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র কে বর্তমানে স্মার্ট আইডি কার্ড এ রুপান্তর করা হয়েছে।
আমাদের বাংলাদেশের একজন নাগরিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে তার ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র। ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও অনলাইন কপি ডাউনলোড করার ধরন বর্তমান সময়ে অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।
আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও অনলাইন কপি ডাউনলোড করবেন কিভাবে সে সম্পর্কে পুরোপুরি ভাবে জানতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
ভোটার আইডি কার্ড যাচাই
আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় পত্র হচ্ছে নিজ নিজ ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র। আপনারা যারা একদম নতুন ভোটার তালিকায় নাম দিয়েছেন কিন্তু এখনো আপনার ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র নিজ হাতে পাননি তাদের ক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও ডাউনলোড করে যাবতীয় কাজ করতে পারবেন এনআইডি কাজ অনলাইল ডাউনলোড কপি ব্যবহার করে।
একটি প্রতিষ্ঠানের লোক নিয়েগ সহ নানা প্রয়োজনে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করার প্রয়োজন হয়।
তাছাড়াও আমাদের অনেকের নানা অভিযোগের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। কিন্তু যাচাই করার আমরা অনেকেই আছি যারা জানিনা। আপনি যদি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করতে চান বা এনআইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে চান, তাহলে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুনঃ
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড/ NID কার্ড যাচাই করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে যে কাজটি করতে হতে পারে তা হলো অনলাইনের মাধ্যমে এখানে ভিজিট করা।
উপরের এই লিংকে ভিজিট করার সাথে সাথে আপনি নিচের ছবির মত একটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন । সেখানকার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর বা ফরম স্লিপ নম্বর চেয়ে যে ফাঁকা ঘর দিয়েছে সেখানে আপনি আপনার ফরম নম্বর/ এআইডি নম্বর লিখুন।
যখন আপনি আপনার আইডি কার্ড পাওয়ার জন্য আপনার নিজ নিজ উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন অফিসে যেয়ে আবেদন করেছিলেন, তখন আপনাকে অবশ্যই একটি ফরম স্লিপ নম্বর দেয়া হয়েছিল। এখন যদি আপনি আপনার না পাওয়া ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করতে যান, তাহলে অবশ্যই সেই ফরমের সিলিপ নম্বরটির প্রয়োজন হবে।
আপনি উপরের ফাঁকা ঘরে আপনার ফরম সিলিপ নম্বর/এনআইডি নম্বর বসিয়ে দেওয়ার পর নিচের ফাকা করে আপনাকে সঠিক মতন জন্মতারিখ বসাতে হবে। সঠিকভাবে জন্ম তারিখ বসিয়ে দেয়ার পর আপনাকে তার নিচে ক্যাপচা এন্ট্রি করতে হবে, এবং তারপর আপনাকে ভোটার তথ্য দেখুন সেখানে ক্লিক করতে হবে।
আপনি যদি সঠিকভাবে ফরম নম্বর ও সঠিক ভাবে জন্ম তারিখ বসিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার ভোটার তথ্য দেখতে পারবেন। সেখানে আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড যাচাই সাধারণত আপনি এভাবে খুব সহজে এবং খুব ভালোভাবে করতে পারবেন। আপনারা যারা এখনো ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেননি তারা দেরি করে ভুল না করে ভোটার হয়ে নিন বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করুন।
আপনারা যারা অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান তারা এখানে ভিজিট করুন। নতুন যে পেজটি আসবে সেখানে দেখতে পারবেন নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন বা অনলাইনে আবেদন করুন এখানে ক্লিক করুন।
এবার আপনার চোখের সামনে যে ফরমটি আসবে সেখানে উপরের ফাঁকা ঘরটিতে আপনার পুরো নাম ইংরেজিতে লিখতে বলবে, দেরি না করে সেই ফাঁকা ঘরটিতে আপনার পুরো নাম খুব ভালোভাবে ইংরেজিতে লিখুন। তারপরের ঘরগুলোতে আপনি আপনার জন্ম তারিখ সঠিকভাবে বসিয়ে দিন এবং সঠিক ভাবে ক্যাপচা পুরন করে বহাল এ ক্লিক করুন।
তারপরের পেজে আপনার নির্দিষ্ট মোবাইল নাম্বারটি চেয়ে থাকবে, সেখানে সঠিকভাবে মোবাইল নম্বর দিয়ে দিন। এরপর আপনার সেই সচল কৃত মোবাইল নাম্বারে একটি ছয় ডিজিটের কোড আসবে। এবার ফাঁকা ঘরে যাচাইকৃত সেই ছয় ডিজিটের কোড বসিয়ে দিয়ে আবার বহাল এ ক্লিক করুন।
আপনার ইউজারনেম এবং আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড সেট করতে বলবে। আপনি যে পাসওয়ার্ডটি প্রদান করবেন সেটি অবশ্যই খুব ভালোভাবে পরবর্তীতে মনে রাখার চেষ্টা করবেন। আপনার দেয়া সেই পাসওয়ার্ডটি পরবর্তীতে লগ ইন করতে গেলে অবশ্যই প্রয়োজন হবে।
পুনরায় বহাল এ ক্লিক করার পর আপনার নিজস্ব একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি হবে। পরবর্তীতে যে পেজটি আপনার সামনে আসবে সেখানে প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করুন এবার আপনার ব্যক্তিগত কিছু ইনফরমেশন সেখানে চাইবে, আর তাই এডিটে ক্লিক করুন।
এবার আপনার সামনে যে পেজটি আসবে সেখানে আপনার পিতা-মাতার তথ্যাদি সহ যাবতীয় তথ্যাদি যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার এসব যাবতীয় ইনফর্মেশন আপনাকে খুব ভালোভাবে পূরণ করতে হবে।
পরবর্তীতে যে পেজটি আসবে সেখানে আপনার স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা খুব ভালো ভাবে দেয়ার মধ্য দিয়ে ফরম পূরণ করে ফেলুন। তারপরে যে পেজটি আসবে সে পেজটিতে ডাউনলোড অপশন এ ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিন।
এখানে আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ফরম নম্বর পেয়ে যাবেন। কাগজ প্রিন্ট করার পর আবেদনকারীর স্বাক্ষর দিতে হবে, এবং ৩৪ ও ৩৫ নম্বর ক্রমিকে আপনার যে কোন একজন আত্মীয়ের ভোটার আইডি কার্ড নম্বর ও স্বাক্ষর দিতে হবে।
এরপরে ৪০, ৪১, ৪২ নম্বর ক্রমিকে আপনার এলাকার একজন জনপ্রতিনিধির নাম, তার ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর, ও স্বাক্ষর লাগবে। স্বাক্ষরের নিচে তাদেরকে সিল ব্যবহার করতে হতে পারে। ৪৩ নম্বর ক্রমিকে আপনার স্বাক্ষর ও তারিখ দিয়ে সেই ডকুমেন্ট নিয়ে আপনার এলাকার নির্বাচন অফিসে চলে যান।
ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড
ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করার উপায় আমরা উপরে খুব ভালোভাবে বর্ণনা করেছি। আপনি যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করতে চান তাহলে অবশ্যই উপরে আমাদের বর্ণনা ফলো করুন।
ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি দিয়ে আমরা আইডি কার্ড থাকার মতো এক ধরনের বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকি। আমরা অনেকেই আছি আমাদের ভোটার আইডি কার্ড নেই কিন্তু আমরা অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ডের কপি ডাউনলোড করতে পারছি না। তারা আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে খুব সহজেই এই কাজটি করে ফেলতে পারবেন।
আপনার ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম রেজিস্ট্রেশন করার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আপনি এখানে ক্লিক করুন।
প্রথমে যে ফাঁকা করতে দেখতে পারবেন সেখানে আপনার এনআইডি নম্বর বা ফরম স্লিপ নম্বর সঠিকভাবে বসিয়ে দিন। পরবর্তী ফাঁকা ঘরে জন্ম তারিখ সঠিক ভাবে ক্যাপচা পূরণ করে এন্ট্রি করতে হবে।
প্রথম ধাপ সম্পন্ন হওয়ার পর পরবর্তী ধাপে আপনাকে আপনার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা সঠিকভাবে বসিয়ে দিতে হবে। এবার আপনার দেয়া মোবাইল নাম্বার শো করতে থাকবে। আপনি চাইলে আপনার ফোন নম্বরটি কে পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
আপনি যদি মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করতে না চান তাহলে বার্তা পাঠান এ ক্লিক করুন। তারপরে আপনার মোবাইলে ছয় ডিজিটের একটি ওটিপি নাম্বার পাঠানো হবে, সেটি সঠিক ভাবে পরবর্তী ফাঁকা ঘরে বসিয়ে দিন, এবং বহাল এ ক্লিক করুন।
এরপরে আপনি একটি স্ক্রিন দেখতে পারবেন, সাধারণত সেই স্ক্রিন টিকে বলা হয় QR কোড। আপনার দেখা শেই স্ক্রিন টিকে আপনার মোবাইল ফোনে অবশ্যই চালু রাখতে হবে। চালু রেখে আপনার মোবাইল ফোন থেকে এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপটি ইনস্টল করে নিতে হবে। অ্যাপটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।
এবার আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো আপনার ফোন থেকে সেই এনআইডি ওয়ালেট অ্যাপ টি ওপেন করতে হবে। তারপরে সেই QR স্ক্রিনটিকে খুব সুন্দর ভাবে স্ক্যান করে নিতে হবে। সঠিকভাবে স্ক্যান হওয়ার পর আপনার ছবি ভেরিফিকেশন করতে বলা হবে।
এরপরে আপনাকে ফেস স্ক্যান করতে বলা হবে, সঠিকভাবে স্ক্যান হলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে। এবার পরবর্তী আশা পেজে আপনি আপনার পাসওয়ার্ড সেট করতে পারবেন। যদি না করে থাকেন তাহলে এড়িয়ে যান এই লেখাটিতে ক্লিক করুন।
এবার আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ছবি সংযোজিত আকারে দেখতে পাবেন। সেখানে নিচে ডাউনলোড নামে একটি অপশন দেখতে পারবেন। সেখানে ক্লিক করে আপনি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। ডাউনলোড করে নেবার পর আপনি এই অনলাইন কপি টিকে একদম ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
শেষ কথা
আশা করি আমাদের উপরে আলোচনা গুলো সুন্দর ভাবে পড়ার মাধ্যমে আপনি ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও অনলাইন কপি খুব সহজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আমরা উপরে খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছি, এক্ষেত্রে আপনাকে কোন রকম ঝামেলায় পড়তে হবে না।
আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার পছন্দ মত যে কোন একটি সাইটে একবার শেয়ার করবেন, আপনার করা একটি শেয়ার আমাদো ভালো আর্টিকেল লিখতে উৎসাহিত করবে। ধন্যবাদ।