জেনে নিন ১০টি ফ্রি ছোট ছোট পাওয়ারফুল সফটওয়্যার সম্পর্কে

উইন্ডোজে এমন অনেক পাওয়ারফুল সফটওয়্যার  আছে যেগুলো আকারে অনেক ছোট কিন্তু অনেক পাওয়ারফুল এবং এই সফটওয়্যার গুলো অনেকেরই নজরের আড়ালে থাকে।আজকে আমরা এমনই দশটি  পাওয়ারফুল সফটওয়্যার  এর ব্যাপারে তুলে ধরার চেষ্টা করব। যেগুলো আকারে খুবই ছোট, খুবই কাজের, খুবই প্রডাক্টিভ এবং খুবই পাওয়ারফুল। তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক পাওয়ারফুল সফটওয়্যার গুলো সম্পর্কে

জেনে নিন ১০টি ফ্রি ছোট ছোট পাওয়ারফুল সফটওয়্যার সম্পর্কে
জেনে নিন ১০টি ফ্রি ছোট ছোট পাওয়ারফুল সফটওয়্যার সম্পর্কে

আরও পড়ুনঃ

১০টি ফ্রি ছোট ছোট পাওয়ারফুল সফটওয়্যার

. Everything (এভ্রিথিং)

প্রথমেই যে সফটওয়্যারটির নাম আসে সেটি হল এভরিথিং। এর ফাইল সাইজ হল . মেগাবাইট মাত্র এবং এর কাজ হচ্ছে সার্চ করা। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন উইন্ডোজ এর ডিফল্ড যে সার্চ আছে সেটা খুবই স্লো। কোনো একটা টার্ম লিখে সার্চ করলে অনন্ত কাল লেগে যায় সার্চ কমপ্লিট হতে কিন্তু এভরিথিং দিয়ে যদি সার্চ করেন তাহলে ইন্সট্যান্টলি আপনি সেই ফাইল খুঁজে পেতে পারবেন। এমনকি আপনার সার্চ নেম সম্পূর্ণ লিখে সার্চ করার আগেই সার্চ রেজাল্ট পেয়ে যাবেন। যেটা খুবই ফাস্ট। এটি আপনার প্রত্যেকটি ফাইল এর ভিতর থেকে বা প্রত্যেকটি ড্রাইভ থেকে যেখানেই আপনার কাঙ্খিত ফাইল থাকুক না কেন খুঁজে বের করে আনতে সক্ষম মুহূর্তেই।

 

. Unlocker (আনলকার)

ছোট কিন্তু খুবই কাজের মধ্যে যেই পাওয়ারফুল সফটওয়্যার এর নাম দ্বিতীয়তে আসছে সেটি হল আনলকার। এর সাইজ মাত্র ৩৯৩ কিলোবাইট। ছোট বলে অবহেলা করার কোনো কারণ নেই। এই সফটওয়ারটি খুবই পাওয়ারফুল। আমাদের কম্পিউটারে এমন কিছু ফোল্ডার থাকে যেগুলো ডিলিট হয় না, মুভ হয়না, রিনেম হয়না সেই ফাইল বা ফোল্ডার ডিলিট করার জন্য আপনারা এই আনলকার ব্যবহার করতে পারেন যেটা দিয়ে ইন্সট্যান্টলি ফাইল ফোল্ডার ডিলিট হয়ে যাবে যদি সেটা আপনি নরমালি ডিলিট করতে পারছেন না এমন হয়ে থাকে। এমন অনেক ফাইল ফোল্ডার আছে যেগুলো ইন্সট্যান্টলি ডিলিট হয় না কিন্তু সেটার রিস্টার্ট এর জন্য সিডিউল করে রাখা হয়। তারমানে আনলকার দিয়ে ডিলিট দেওয়ার পর যখন আপনার কম্পিউটার রিস্টার্ট দিবেন তখন আপনার সেই ফাইলটিও ডিলিট হয়ে যাবে কিন্তু অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন উইন্ডোজ এর ফাইল ডিলিট হয়ে না যায়। শুধুমাত্র যে ফোল্ডারটি আপনি তৈরি করেছেন কিন্তু ডিলিট হচ্ছে না সেটা ডিলিট করবেন।

 

. Texter (টেক্সার)

আরেকটি সফটওয়্যার হচ্ছে টেক্সটার যার সাইজ মাত্র ৪৬২ কিলোবাইট। এই সফটওয়্যারটি তাদের জন্য যাদের টাইপ করতে গেলে হাত ব্যথা করে। যে কারণে শব্দগুলোকে সংক্ষিপ্ত করতে করতে এমন পর্যায়ে নিয়ে যান পরে লিখার পর নিজেই বুঝতে পারেন না আসলে কি লিখেছেন। আমরা এই সফটওয়্যার দিয়ে ওইসব সংক্ষিপ্ত শব্দ গুলোকে ডিফাইন্ড করে দিতে পারি। তাহলে সংক্ষিপ্ত শব্দটি আপনি লিখলেও তা এই সফটওয়ারটি একচুয়াল বানানে কনভার্ট করে নিবে। আবার এই সফটওয়্যার এর সঠিক বানান গুলো সেট করে নিলে তা ভুল বানান অটোমেটিক্যালি সঠিক করে নিবে। চিকিৎসকরা এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারেন। প্রেসক্রিপশন লিখতে এই সফটওয়্যরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

. Unchecky (আনচেকি)

এই সফটওয়্যারটির সাইজ হচ্ছে .২৯ মেগাবাইট এবং এই সফটওয়ারটি খুবই কাজের। আমরা যখনই উইন্ডোজ সফটওয়্যার ইন্সটল করি তখন নানান ধরনের বক্সে টিক চিহ্ন দিতে হয় বা আনচেক করতে হয় উদাহরণস্বরূপ আপনি ইনস্টল দিচ্ছেন একটা সফটওয়্যার কিন্তু মাঝখানে আপনার কাছে ইন্সটল চাচ্ছে অন্য সফটওয়্যার এর। অনেকের ব্রাউজার লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন নানান রকমের টুলবার ইন্সটল হয়ে থাকে। সার্চ বার চেইঞ্জ হয়ে যায়। অনেক সফটওয়্যার অযথাই ইনস্টল হয়ে যায়। এগুলোর কারণে অনেক স্পাইওয়্যার রানসম‌ওয়্যার এর মত এমন বড় বড় থ্রেড কিন্তু আপনার কম্পিউটারে ঢুকতে পারে। এসব ইনস্টলেশন এড়াতে আপনি ব্যবহার করতে পারেন আনচেকি সফটওয়্যারটি। আপনি যখন কোনো একটি সফটওয়্যার ইন্সটল করতে যাবেন তখন শুধু সেই সফটওয়ারটি ইন্সটল হবে বাকি যেসব বক্স আছে সেগুলো অটোমেটিক আনচেক হয়ে যাবে এবং আপনার বারবার এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।

 

. QTTABBAR 

এই সফটওয়্যারটির সাইজ হচ্ছে .৬৩ মেগাবাইট। এই সফটওয়্যারটি খুবই কাজের। আপনি চাইলে উইন্ডোগুলোকে ট্যাব আকারে সাজিয়ে লিখতে পারেন যেমন আমরা যখন কোনো ওয়েব ব্রাউজার ইউজ করি তখন প্রত্যেকটি ওয়েবসাইট আমরা এক একটি নতুন ট্যাবে ওপেন করি কিন্তু আমরা যখন উইন্ডোজে মাল্টিপল ফোল্ডার ওপেন করি তখন সেই উইন্ডোজগুলো কিন্তু স্ক্যাটার থাকে বা টাস্কবার অনেকগুলো বার থাকে। আপনারা চাইলে ওয়েব ব্রাউজারে আমরা যেরকম ট্যাব দেখি ফোল্ডারগুলোকেও সেভাবে ট্যাব আকারে সাজিয়ে রাখতে পারেন এই সফটওয়্যার দ্বারা। যাতে করে সহজে অ্যাক্সেস করতে পারেন।

 

. Windirstat

এই সফটওয়্যারটির সাইজ হচ্ছে মাত্র ৬৩০ কিলোবাইট। এই সফটওয়্যারটি দিয়ে আপনারা চাইলে আপনাদের কম্পিউটারের যে ড্রাইভগুলো আছে সেগুলো খুবই সহজে খালি করতে পারেন। খেয়াল করবেন আমাদের উইন্ডোজ এর যে ডিফল্ড এক্সপ্লোরার আছে সেগুলো কোন ফোল্ডার কতটুকু স্পেস নিচ্ছে সেটা দেখায় না কিন্তু windirstat আপনার সবগুলো ফাইল কে স্ক্যান করে প্রত্যেকটা ফাইলের সাইজ কত ? কোন ফোল্ডার এর ভিতরে কতটুকু সাইজের ফাইল আছে ? বা কতটি ফাইল আছে ? সবগুলো লিস্ট আকারে দিয়ে দিবে এবং আপনার সবগুলো ফাইল এর গ্রাফিক্যাল ভিউ এখানে দেয়া হবে। যেখানে বড় ফাইল গুলোর জন্য বড় বক্স ছোট ফাইলগুলোর জন্য ছোট বক্স এবং প্রত্যেকটা ফাইল এর জন্য আলাদা আলাদা কালার অ্যাসাইন করা থাকবে। যার ফলে আপনি বড় বক্সে ঢুকে বুঝতে পারবেন আপনার কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় ফাইল কোনটি এবং কোনটি ডিলিট করলে আপনার কম্পিউটারের সবচেয়ে বেশি স্পেস খালি হবে অথবা আপনি শুধু এক ধরনের ফাইল ডিলিট করতে চান যেমন আপনি শুধু জিপ ফাইলগুলো ডিলিট করতে চান। তখন জিপ ফাইল এর কালার অনুযায়ী সেটায় ক্লিক করবেন এবং তখন সকল জিপ ফাইল একটি লিস্ট আকারে চলে আসবে এবং আপনি সেখান থেকে বক্স গুলো দেখে দেখে খুব সহজে জিপ ফাইলগুলো ডিলিট করতে পারবেন।

 

. Recuva

এই সফটওয়্যারটির সাইজ হচ্ছে .২৮ মেগাবাইট আপনারা অনেকেই হয়তো এই সফটওয়্যারটির নাম শুনেছেন এটি একটি ফ্রি ডাটা রিকভারি সফটওয়্যার। তারমানে আপনি যদি কোনো ফোল্ডার ডিলিট করে দেন তাহলে সেই ফোল্ডারটি যদি পরবর্তীতে আবার ফেরত আনতে চান তখন এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারেন। মার্কেটে আরো অনেক সফটওয়্যার আছে যেগুলো ওয়াদা করবে ডাটা রিকভার করে দেয়ার এবং আপনার ফাইল গুলো দেখাবে যেগুলো ডিলিট করেছেন কিন্তু রিকভার করতে গেলে টাকা চাবে। সে ক্ষেত্রে একটি ফ্রী সফটওয়্যার হিসেবে এই সফটওয়্যার টি এমনটা করেনা এবং খুব সুন্দর ভাবে আপনার ফাইল আপনি রিকভার করতে পারবেন এই সফটওয়্যারটি দিয়ে।

 

. DITTO

এটি একটি ক্লিপ বোর্ড ম্যানেজার এবং বাকি ছোট্ট সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে তুলনামূলক বড় সফটওয়্যার। এর  সাইজ ২১. মেগাবাইট। এই সফটওয়্যার দ্বারা আপনি মাল্টিপল ডাটা কপি করে নিতে পারেন এবং পেস্ট করার সময় আপনার কাঙ্খিত ডাটা টি সফটওয়্যারটির মাধ্যমে নির্বাচন করতে পারেন।

 

NINITE.COM

এটি হচ্ছে আসলে একটি ওয়েবসাইট যা অনেক উপকারী। আমরা যখন উইন্ডোজ ইন্সটল করি তখন কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বা অনেক প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হয় যেমন কোনো মিডিয়া প্লেয়ার, কোনো মেসেজিং টুল কিংবা ডকুমেন্ট ভিউয়ার টুল ইমেজ ভিউয়িং টুল। এই যে সফটওয়্যারগুলো এগুলো সাধারণত আমরা ব্যাকআপ রেখে দেই আমাদের হার্ড ড্রাইভ এবং এরপর আমরা ইন্সটল করি কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায় সফটওয়্যারগুলো ব্যাকডেটেড হয়ে যায়। আমাদের উচিত লেটেস্ট ভার্সন গুলো ইন্সটল করা।NINITE.COM- যত প্রকার দরকারি ফ্রি সফটওয়্যার আছে সেগুলোর একটি লিস্ট করা থাকে। আপনি এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার পছন্দের সফটওয়্যারগুলো একসাথে মার্ক করে ওয়েব সাইটের নিচে get your ninite অপশনটিতে ক্লিক করলে ninite এর একটি ইনস্টলার ডাউনলোড হবে। তারমানে ninite এর একটি ইনস্টলার ফাইল ডাউনলোড হবে যার সাইজ ৪১৫ কিলোবাইট। এরপর স্টার্ট ডাউনলোড দেয়ার পর ডাউনলোড হয়ে গেলে ওপেন ক্লিক করলেই দেখতে পাবেন প্রিপেয়ারিং সেটআপ। মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনাকে এরপর আর কিছুই করতে হবে না বাকি কাজটা এই ইনস্টলার নিজেই করে নিবে।তারমানে ডাউনলোড, ইনস্টল, সেটআপ সব এই এক ক্লিক এই হয়ে যাবে অর্থাৎ আপনাকে প্রত্যেকটি দরকারি সফটওয়্যার আলাদা আলাদা ভাবে ওপেন করে ইন্সটল করতে হবে না ninite সফটওয়্যার সেটা করে দিবে।

 

১০. Turbo Top

এই পাওয়ারফুল সফটওয়্যার টির সাইজ হচ্ছে মেগাবাইট। এই সফটওয়্যারটির কাজ হচ্ছে যেকোনো উইন্ডোজকে সবসময় উপরে রাখা যেমন ধরুন আপনি একটি ওয়েব ব্রাউজ করছেন। ধরা যাক গুগোল ইমেজ থেকে আপনি ছবি ডাউনলোড করছেন কিন্তু প্রত্যেক বার ছবিটি ওপেন করে ড্রেগ করে নেয়ার জন্য আপনার ফোল্ডারে নিয়ে যেতে হচ্ছে। ফোল্ডার ওপেন হলে তারপর আবার মাউস ড্রেগ করে সেই ফোল্ডারে নিয়ে আসতে হচ্ছে কিন্তু আপনি যদি ফোল্ডারটিকে উপরে রাখতে পারেন অর্থাৎ ব্রাউজার এর উপরে যদি সেটি থাকে। তাহলে আপনি ব্রাউজ করছেন, ব্রাউজার ক্লিক করছেন কিন্তু ফোল্ডারটি উপরেই থাকছে। ফোল্ডারটি ব্যাকগ্রাউন্ডে যাচ্ছে না তাহলে আপনার কাজ অনেক দ্রুত হয়ে যাবে। তাই কাজ দ্রুত করার জন্য এই সফটওয়্যার টি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top