কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ আমাদের কম্পিউটারের অতিরিক্ত সিপিইউ ব্যাবহৃত হয় এবং কম্পিউটার ধীর গতির হয়ে যায়।অনেক দিন থেকেই আমাদের এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমরা যারা ইউন্ডোজ ১০ এবং ৭ ব্যাবহার করি, প্রায় সময় ই আমাদের এই সমস্যা দেখা দেয়। আমরা এইটা কে msmpeng.exe সমস্যাও বলে থাকি।কারন এই নামে আমরা একটি ডাটাবেজ ফাইল দেখতে পাই আমাদের ড্রাইভে।আমাদের একটু ভুল ধারণা হলো আমরা এইটাকে ম্যালওয়্যার এর মতোই একটি ভাইরাস ভেবে থাকি। এই জন্যই বার বার এন্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করার পরেও আমরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাই না।এইটিকে ডিজেবল করার মধ্যমে আমরা আমাদের কম্পিউটারের High CPU usage বন্ধ করতে পারি।
আজকের এই পোস্ট এর টাইটেল দেখেই বন্ধুরা হয়তো বুঝে গেছেন যে আজকের পোস্টটি কি নিয়ে।হ্যা! বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব যে কিভাবে আমরা আমাদের কম্পিউটারের অতিরিক্ত CPU ব্যাবহার কমিয়ে আনতে পারি।তো বন্ধুরা আর দেড়ি না করে চলুন শুরু করা যাক।
অতিরিক্ত CPU ব্যবহারের কারণ-
অনেকগুলো কারণ হতে পারে এই সমস্যার জন্য।আমরা এখানে দেখব যে কিভাবে এই সমস্যা গুলো দূর করতে পারি।
ড্রাইভার ইন্সটল সমস্যাঃ– আমাদের উইন্ডোজে আমাদের দরকারি কাজ করার জন্য নানা ড্রাইভার ইনস্টল করে থাকি। কিন্তু এই ড্রাইভার গুলো ইনস্টল করার সময় না না ডাটা বাইপাস হয়ে যায় যার কারনে অতিরিক্ত CPU ব্যবহার হয়ে থাকে। এর জন্য খেয়াল রাখতে হবে যেন ড্রাইভার গুলো ইনস্টল করার সময় কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়।
ইউন্ডোজ টেন আপডেটঃ- আমরা এখন বেশির ভাগ ই উইন্ডোজ টেন ব্যাবহার করে থাকি।সমস্যা এখানেই।এই উইন্ডোজ টেন এ একটি ফিচার রয়েছে যেখানে অটোমেটিক ভাবে উইন্ডোজ আপডেট নিয়ে থাকে। এর ফলে নানা ধরনের চেজ এসে জমা হয় আমাদের কম্পিউটারে। আর বাড়িয়ে তোলে কম্পিউটারের সিপিইউ ব্যাবহার। সবচেয়ে ভালো হয় ইউন্ডোজ টেন এর আপডেট বন্ধ করে রাখা।
রেজিস্ট্রি বাগঃ- অনেক ফাইল এবং এপ্লিকেশন ব্যাবহারের ফলে অনেক হিস্টোরি এবং রেকিস্ট্রি জমা হয়ে যায় আমাদের ডাটাবেজ এ।এসব ডাটা পরে একসাথে আমাদের CPU কে এটাক করে যার ফলে অতিরিক্ত ব্যবহার হয়ে থাকে।
রোধ করারা উপায়-
আমরা এতক্ষন দেখলাম যে কিভাবে অতিরিক্ত CPU ব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থাৎ CPU এর জন্য যে যে কারণ দায়ী।এবার আমরা দেখব কিভাবে আমরা এইটি রোধ করতে পারি।
স্টার্ট আপ এপ্লিকেশন বন্ধ করার মাধ্যমে-
প্রথমে আমরা Task Manager এ ঢুকে যাই।এখানে আমরা কয়েকটি অপশন দেখতে পাব।এখান থেকে এবার “Start up” অপশনটিতে ক্লিক করি।এইবার এখানে আমরা অনেকগুলো এপ্লিকেশন দেখতে পাব যেগুলো আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ডে সিপিইউ ব্যাবহার করে থাকে।এখান থেকে যেসব এপ্লিকেশন আমরা ব্যাবহার কম করি বা তেমন একটা কাজে আসে না অইগুলোকে সিলেক্ট করে ডিজেবল করে দিলেই হলো।এই এপ্লিকেশন গুলো আর ব্যাকগ্রাউন্ডে কোনো সিপিইউ ব্যাবহার করবে না।
Superfetch বন্ধ করা-
Superfetch হলো একটি সার্ভিস যেটি কিনা মুলত উইন্ডোজ টেন এই দেওয়া রয়েছে।এই সার্ভিসটিকে মুলত বলা হয়ে থাকে CPU খাদক।তাহলেই বুঝতেই পারছেন বন্ধুরা কি পরিমান CPU ব্যাবহার হয়ে থাকে এই সার্ভিসেই।তাই এই সার্ভিসটিকে বন্ধ করতে হবে। এইটি বন্ধ করারা জন্য-
১.প্রথমে ইউন্ডোজ Task Manager এ ঢুকে যাই।এরপর এখান থেকে Run new task এ ক্লিক করে একটি নতুন টাস্ক অন করি।এরপর এখানে একটি বক্স আসবে এখানে “services.msc” লিখে OK তে ক্লিক করে দেই।
২.এইবার এখানে পুরো ইউন্ডোজ সার্ভিসটি অন হয়ে যাবে।এখান থেকে খুজে “Superfetch” অপশনটি বের করতে হবে।অনেক গুলো অপশন থেকে এইটি ব্যাবহার করা কষ্টকর হলেও চেষ্টা করলেই পাওয়া যাবে। এরপর অপশনটি পেয়ে গেলে এটাতে ক্লিক করে দেই। এবং এখান থেকে “Properties” এ ক্লিক করে দেই।
৩.এইবার আমরা এখানে একটি নতুন উইন্ডো দেখতে পাব।এই উইন্ডোতে “Startup type” নামের একটি অপশনও আমরা দেখতে পাব এখানে ক্লিক করে দেই।এইবার এখান থেকে এইটি “Disabled” অপশনে ক্লিক করে OK ক্লিক করি তবেই এইটি বন্ধ হয়ে যাবে।
শেষ কথা-
তো বন্ধুরা আশা করি উপরের পদ্ধতি গুলো ঠিকঠাক ভাবে অনুসরণ করলেই আপনি সঠিক ভাবে এই কাজটি করতে পারেন।এখন থেকে আশা করি আর অতিরিক্ত CPU ব্যাবহার নিয়ে কোনো ঝামেলায় পরতে হবে না।আজ এই পর্যন্ত-ই।আবার অন্য একদিন কথা হবে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।
(পোস্টে ব্যাবহৃত স্ক্রিনশট গুলো Beebom থেকে নেওয়া হয়েছে)